This blog deals with the deep-rooted conspiracy how the rainbow alliance of Maoist-TMC-Congress-SUCI with support and fund of capitalists, land-lords, finance capital, corporate media, imperialists and few sold out perverted intellectuals, so-called human right organizations and anti-national NGOs are bent upon weakening the mainstream leftist movement in India.
(CLICK ON CAPTION/LINK/POSTING BELOW TO ENLARGE & READ)
Thursday, February 28, 2013
Wednesday, February 27, 2013
Monday, February 25, 2013
মিছিলে নেমেই মৌলবাদী বন্ধ ভাঙলো বাংলাদেশ |
মিছিলে নেমেই মৌলবাদী বন্ধ ভাঙলো বাংলাদেশ |
আতাউর রহমান
ঢাকা, ২৪শে ফেব্রুয়ারি— ছিলো প্রবল অশান্তির উসকানি। হরতালের সমর্থনে মুসলিম মৌলবাদীদের চোখ রাঙানিও ছিল সর্বত্র। সমস্ত কিছু উপেক্ষা করেই রবিবার পথে নামলো বাংলাদেশ। ফুৎকারে প্রত্যাখ্যান করলো জামাত-সহ ইসলামী দলগুলির ডাকা এদিনের হরতাল। এদিন আরো একবার জানান দিলো মৌলবাদের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের তীব্র জেহাদ।
কয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছাড়া তেমন কোনো আঁচড়ই কাটতে পারলো না এদিনের হরতাল। রাস্তায় নেমে জামাত-সহ ইসলামী দলগুলির ডাকা হরতালকে প্রত্যাখ্যান করল গোটা দেশের সাধারণ মানুষ। গোটা দেশের জনজীবনে তেমন প্রভাব পড়েনি হরতালের।
অন্যান্যদিনের মতই ব্যস্ত ছিল রাজধানী ঢাকা। শহরে দোকানপাট খুলেছে, রাস্তায় যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। শহরজুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন রাস্তায় নিরাপত্তারক্ষীরা টহল দিয়েছেন। বাস, অটো, রিকশা চলেছে। লঞ্চের চলাচলও স্বাভাবিক ছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শেয়ার বাজারের স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরেও কোনো প্রভাব পড়েনি এদিনের হরতালের। ব্যাঙ্ক সহ সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানই খোলা ছিল।
হরতাল প্রত্যাখ্যান করে ঢাকায় মিছিলে শামিল হন কয়েক হাজার মানুষ। হরতালের বিরুদ্ধে পথে নামতে শনিবারই ডাক দিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। শাহবাগ আন্দোলনকে ঘিরে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের ডাকা এদিনের মিছিলে হেঁটেছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা। মিছিলে ছিলেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর এবং নানান পেশার মানুষ। স্লোগানে, গানে উদ্দীপ্ত এই মিছিল শুরু হয় সকাল পৌনে দশটা নাগাদ। শহরে বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ১১টা নাগাদ শাহবাগে শেষ হয় এই মিছিল। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ও জামাত-সহ তার ছাত্র সংগঠন, ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে দৃপ্ত কন্ঠে স্লোগানে গলা মেলান হাজার হাজার মানুষ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে ফাঁসির দাবিতে ফেব্রুয়ারির ৫তারিখ থেকে এই আন্দোলন শুরু হয়। এই দাবি প্রথমে উত্থাপন করে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্ক। পরে তা জনতার আন্দোলনে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। আন্দোলনের উৎকেন্দ্র হয়ে ওঠে শাহবাগ চত্বর। বাংলাদেশের গ্রাম থেকে শহর — সর্বত্র জামাত সহ মৌলবাদ বিরোধী আন্দোলনের অনন্য নজির তৈরি করতে চলছে মনে করছে অভিজ্ঞমহল।
এদিকে, ইসলামী দলগুলির ডাকা হরতালকে ঘিরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটলো মানিকগঞ্জ জেলায়। এদিন মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় গোবিন্ধল গ্রামে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন মহিলা আছেন বলে পুলিস সূত্রে জানা গেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০জন। আহতদের মধ্যে ১৬জন পুলিস কর্মীও আছেন। জামাত সহ ১২টি ইসলামী দলগুলির ডাকা এদিনের হরতালকে সমর্থন জানায় প্রধান বিরোধীদল বি এন পি। তবে, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছাড়া এদিনের ধর্মঘট দেশজুড়ে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি
এদিন সকাল সাতটা নাগাদ মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর সড়কে অবরোধ করে হরতালকারীরা। রাস্তার ওপর থেকে অবরোধ ওঠাতে গেলে পুলিসের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। পুলিসের দিকে ইটপাটকেল ছোঁড়ে অবরোধকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিস লাঠি চালায়। পুলিস রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়ে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পুলিস বেশ কয়েক রাউণ্ড গুলি ছোঁড়ে। সংঘর্ষে অন্তত ৩৫জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার মানিকগঞ্জ জেলায় হরতালের ডাক দিয়েছে ইসলামী দলগুলি। ওই দিন গোটা দেশে প্রতিবাদ আন্দোলন হবে বলে জানানো হয়েছে দলগুলির পক্ষ থেকে।
এদিনের হরতালকে ঘিরে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালায় ইসলামী দলগুলির কর্মী সমর্থকরা। তাদের হামলায় বেশ কয়েকটি দোকান, বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করে। কক্সবাজারেও সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় একটি টি ভি চ্যানেলের সূত্রে জানা গেছে, এখানে হরতালকারীদের সঙ্গে আওয়ামি লিগের সমর্থকদের সঙ্ঘর্ষে অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। গোটা দেশে অবরোধ ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে অন্তত ৫০জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
শাহবাগের আন্দোলনে রাজাকারদের ফাঁসি ও জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবি দেশজুড়ে আলোড়ন তুলছে। তার পালটা জবাব দিতেই এদিনের হরতালের ডাক দেয় মৌলবাদীরা। তাদের পাশে বি এন পি দাঁড়িয়ে যাওয়ায় হরতালকে ঘিরে প্রবল আশান্তির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো গোটা দেশেই। সমস্ত কিছু আতঙ্ক কার্যত দুরমুশ করেই মৌলবাদকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিল বাংলাদেশ। শাহবাগের বাংলাদেশ।
আসলে আপনারা নিজেরা ভয় পেয়েছেন |
আসলে আপনারা নিজেরা ভয় পেয়েছেন |
মানব মুখার্জি
১ আপাতত ছাত্র সংসদ নির্বাচন এরাজ্যে বন্ধ। মুখে যাই বলা হোক, আসলে গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজের ঘটনার পরবর্তী তৃণমূলী দাওয়াই এটাই। মুন্নাভাইরা মুক্ত থাকবে, ‘দাদা’ ববি হাকিম মন্ত্রী থাকবে, কাটা যাবে বেচারি ছাত্রদের নিজস্ব সংসদ গড়ার অধিকারটুকুও।
এ প্রশ্নে এক অভূতপূর্ব মতের ঐক্যও গড়ে উঠেছে। তৃণমূল-রাজ্যপাল-আনন্দবাজার-বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-প্রাক্তন পুলিস কর্তা সবাই। তৃণমূলের চোখে এখন কলেজগুলোও টাকা কামানোর উর্বর ক্ষেত্র। যেখানে ভবিষ্যতের বড় তোলাবাজরা হাত পাকাবে। ৭২-’৭৭-এর মহান ঐতিহ্য ৩৪ বছর ‘দমবন্ধ’ করা অবস্থা কাটিয়ে আবার বর্ধিত মহিমায় ফিরে আসছে। অ্যাডমিশন থেকে পরীক্ষার নম্বর — প্রায় ছাপানো রেট কার্ড দিয়ে টাকা আদায় হয়। ফলত ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন সোনার খনির দখলের প্রতিযোগিতা — গুলি, গোলা, বোমা এখন কলেজের গেটে ‘ন্যায়সঙ্গত’ হাতিয়ার। বসুন্ধরা এবং তোলা দুটোই বীরভোগ্যা — কাজেই ছাত্র সংসদ দখল হবে। নির্বাচনের কথা বলে কোন্ অর্বাচীন? এখন নতুন ফতোয়ার মাধ্যমে ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন’ নামক বিধিবদ্ধ আপদটিকে বিদায় করা গেল, কিন্তু তোলাবাজি অটুট থাকবে। কারণ এই কাজটি তত্ত্বাবধান করার জন্য কলেজগুলোর পরিচালন কমিটির মাথায় এনে বসানো হয়েছে ববি-আরাবুল-বেচারাম এবং সমতুল্য তৃণমূল নেতাদের। আর সব মিলিয়ে কলেজ ছাত্র সংসদ একটু বিপজ্জনক বটে। কোনোভাবে যদি সত্যি সত্যি একটি নির্বাচন হয়ে যায় তবে এরাজ্যে একটি কলেজেও তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে না। এইসব গণতন্ত্রের ফ্যাচাং করে জমিদারি হাতছাড়া করার রিক্স নেওয়া যায় না।
গার্ডেনরিচ ঘটনায় মাননীয় রাজ্যপালের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াও তাই — বন্ধ করে দাও ছাত্র সংসদ নির্বাচন। পরাধীন দেশে ছাত্রদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশনেতারা — এঁরা কি সব নির্বুদ্ধি ছিলেন? এ কথা ঠিক সেই নেতারা যখন ক্ষমতায় এলেন প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের চক্ষুশূল হয়েছিলো। ছাত্র সংসদ নির্বাচন বাতিল করার দাওয়াই-এর পেছনে আসল লক্ষ্য হলো — শিক্ষিত তরুণ সমাজকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনীতি দেশের ভবিষ্যত রাজনীতি এবং ভবিষ্যতের রাজনীতিকদের তৈরি করে। মহামান্যরা ঠিক কি চান? রাজনীতিতে আসুক মুন্নাভাই, আরাবুল ইসলাম এবং তাদের দলবলেরা — শিক্ষিত নীতি বোধসম্পন্ন তরুণেরা যাতে না আসে। একজন রাজনীতিককেও কিছু জিনিস শিখতে হয়, কিছু জিনিস বুঝতে হয় — তারও একটা শিক্ষানবিশী প্রয়োজন। সমস্যা হলো রাজনীতি সবাই করে। সমাজবিরোধী, ফাটকাবাজ, প্রাক্তন পুলিস-আমলা সহ সবাই। কারণ রাজনীতি এদের কাছে ক্ষমতা। রাজনীতির রাজটা তারা বোঝেন, সঙ্গে নীতি বলে একটা কথা আছে সেটাকে এরা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন। ক্ষমতার লোভটা সহজাত, কিন্তু নীতিবোধটা শিখতে হয়, প্রয়োগ করা জানতে হয়। এই শেখার ক্ষেত্রটিকে অপ্রয়োজনীয় বলে ঘোষণা করার চেষ্টা হচ্ছে।
(২)
যেই সমস্যার থেকে এই ফতোয়া, আর প্রকৃত চরিত্র এবং সমাধানের রাস্তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে গেছে গোটা রাজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বা বাদ থাকবে কেন। সমাজবিরোধী দৌরাত্ম্য বন্ধ করা যাবে না, তাই ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হলো। সমাজবিরোধীদের নিরাপদ এবং তরতাজা রাখাটাই এ রাজ্যের সরকারের প্রধান কাজ, তাতে অন্য কিছু বিসর্জন দিতে হলেও কোনো অপরাধ নেই। ভারতীয় রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন কোনো নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় বিষয়টা একটি অন্য মাত্রা নিয়েছে। এখানে সরকার, সরকারী দল এবং সমাজবিরোধীরা কাজ করছে এমনভাবে, যে অনেক ক্ষেত্রে এগুলোকে আলাদা করা যাচ্ছে না। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ — গার্ডেনরিচের ঘটনা। প্রথমত, যেটা বোঝা দরকার তা হলো — গোটা ঘটনাটা নিছক একটি কলেজ ইউনিয়ন দখল করার জন্য করা হয়নি। উদ্দেশ্য ছিলো আরও বড়। রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা তৃণমূল, সামনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপনির্বাচন। পুলিস অফিসার তাপস চৌধুরী গুলিবিদ্ধ হবার পর অবতীর্ণ হলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ আস্থাভাজন ববি হাকিম। তিনি ঐ কলেজের পরিচালক কমিটির চেয়ারম্যান, স্থানীয় বিধায়ক এবং মুন্নাসহ বাকি মাফিয়া নেতাদের গডফাদার। তিনি প্রথমেই মিডিয়ার সামনেই সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে জানালেন পনেরো মিনিটের মধ্যে তিনি গোটাটা সামলে নেবেন। তারপর মিডিয়ার কাছে তার বিবৃতি — গণ্ডগোল করেছে ‘কংগ্রেস এবং সি পি এম-এর একাংশ।’ শুধু তাই না সি পি এমের পার্টি অফিস থেকে বোমাসহ দুজন ধরা পড়েছে। ঘটনা হলো, কলেজের প্রায় উলটো দিকেই সি পি আই (এম)-এর জোনাল কমিটি অফিস। এবং সি পি আই (এম) অফিস থেকে অস্ত্র বা বোমা উদ্ধারটা মমতা ব্যানার্জির আমলে সবচেয়ে সহজ কাজ। আর যারা টিভি দেখেছেন তারা লক্ষ্য করবেন গুলিটি চালানো হলো উলটো দিকে মুখ করে। অর্থাৎ মনে হবে গুলিটি এসেছে মোক্তারের লোকজন বা কংগ্রেসের জমায়েতের দিক থেকে। তাহলে বিষয়টা দাঁড়ায় এরকম সি পি এম অফিস থেকে বোমা উদ্ধার এবং কংগ্রেসের জমায়েত থেকে গুলি — নিহত পুলিস অফিসার। চিত্রনাট্য তৈরি। বাধ সাধলো টিভি ক্যামেরা—তারা গোটাটা তুলেছিলো। কিন্তু ববি হাকিম যখন মিডিয়াকে বলছেন, তখন তিনি এটা জানেন না। এই গোটা চিত্রনাট্যের প্রধান চরিত্র কেবল ববি হাকিম এবং মুন্না ভাইয়ের লোকজনরা নয়। পুলিসকেও একটা ভূমিকা পালন করতে হয়। আর সবাই দেখেছে হত্যাকারীকে ধরেও পুলিস ছেড়ে দিলো। সমাজবিরোধীরা সশস্ত্র আর পুলিস সবসময় নিরস্ত্র থাকবে, এতো খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত।
(৩)
মমতা ব্যানার্জি এবং তৃণমূলের মতো সব প্রশ্নে অধঃপতিত একটি রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতায় আসে তখন সেখানে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বা দায়বদ্ধতা প্রত্যাশা করা যায় না। পুলিস প্রশাসনকে ব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে এমনভাবে যেন সেটা তৃণমূল কংগ্রেসের একটি শাখা সংগঠন। এর একটি প্রত্যক্ষ প্রভাব দেখা যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলার সামগ্রিক অধঃপতনের মধ্যে। প্রথমে, সি পি আই (এম) এবং বামপন্থী দলগুলোর বিরুদ্ধে সামগ্রিক হামলা চালানোর জন্য সমাজবিরোধীদের লাইসেন্স দিল পুলিস। পরে হামলাবাজি প্রসারিত হলো অন্য সব ক্ষেত্রে। কিন্তু সমাজবিরোধীদের একবার লাইসেন্স দিলে সেই লাইসেন্স আর প্রত্যাহার করা যায় না।
সমাজে মানুষের দুটি ভাগ। এক, আইন মেনে চলা সাধারণ মানুষ; দুই, আইন ভাঙতে চাওয়া সমাজবিরোধী। পুলিসের কাজ আইন রক্ষা করা অর্থাৎ সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা। ভবানীপুর থানা আক্রমণ করলো তৃণমূলীরা। উপলক্ষ্য তাদের জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানের মিছিলকে ক্যানসার হাসপাতালের সামনে মাইক বন্ধ করার আইনসম্মত পুলিসী অনুরোধ। থানা আক্রমণকারীদের পুলিস লকআপ থেকে নিজে মুখ্যমন্ত্রী মধ্যরাতে গিয়ে ছাড়িয়ে আনলেন এবং বারো ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারকারী পুলিস অফিসারদের বদলি করে দিলেন। এর মধ্যে দিয়ে দু’পক্ষকেই পরিষ্কার বার্তা দিয়ে দেওয়া শুরু। সমাজবিরোধীদের জানিয়ে দেওয়া গেল — আমরা তোমাদেরই লোক। আর পুলিসকেও বোঝান গেল কাদের পক্ষে তাঁদের দাঁড়াতে হবে। এর অবশ্যম্ভাবী ফল হলো, হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো সাধারণ আইন-শৃঙ্খলা। আর বাড়তি উপসর্গ হিসাবে দেখা গেলো পুলিসের ওপর তৃণমূলী সমাজবিরোধীদের হামলার স্রোত — সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠলো গার্ডেনরিচ হত্যাকাণ্ডে।
কিন্তু এই রাজ্যে পুলিসের সামনে যে সঙ্কট সেটা অল্পবিস্তর সব রাজ্যের প্রশাসনের সামনেই। রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন এবং দুর্নীতি যত বাড়ছে পুলিস এবং সাধারণ প্রশাসনের সামনে এই প্রশ্নটা বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে — কাকে সন্তুষ্ট করবে, আইনকে না দুর্বৃত্ততুল্য রাজনৈতিক নেতাদের। সরকারের নির্দেশ মেনেই প্রশাসন এবং পুলিসকে চলতে হয়। কিন্তু তারা কিভাবে কাজ করবে — তা নিয়ে আইনেও পরিষ্কার নির্দেশ আছে। যে রাজনৈতিক নির্দেশ আইন মোতাবেক না — তাকে মেনে চলতে কেউ বাধ্য নয়। কিন্তু এটাও ঠিক নির্দেশ না মানলে সরকারের রাজনৈতিক রোষের মুখে পড়তে হবে; কি করবেন প্রশাসকরা? একটি সহজ রাস্তা পালানো। এরাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর টেবিলে এসে জমা পড়ছে একের পর এক আই এ এস, আই পি এস অফিসারদের দিল্লিতে ‘পালানোর’ আবেদন। সংখ্যাটি প্রায় রেকর্ড-এর পর্যায়ে উঠেছে।
এটা সব সময়ের জন্য সত্য — যিনি দক্ষ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন তার রাজনৈতিক আনুকূল্যের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যোগ্যতাহীনরাই রাজনৈতিক নেতাদের চারিদিকে ভিড় করে আনুকূল্য পেতে। এবং এরা তা পায়, ফলত সরকারী মন্ত্রীদের অপদার্থতার ভারকে আরও বাড়িয়ে দেয় এই অযোগ্য সরকারী কর্তারা। পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করতে তৎকালীন পুলিস কমিশনারের বিবৃতি — গোটা ঘটনাটি সাজানো। এর মূল্য হলো দময়ন্তী সেনের বদলি এবং কলকাতা পুলিসের অধঃপতন। এখন দেখা যাচ্ছে দেশ কাঁপানো দুর্নীতিগুলোর জন্য যত রাজনৈতিক নেতা অভিযুক্ত হচ্ছেন, তার থেকে বেশি হচ্ছেন সহযোগী আমলারা। আবার বিপরীত চিত্রও আছে — নরেন্দ্র মোদীর সংগঠিত দাঙ্গা এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন আই পি এস অফিসার।
পশ্চিমবাংলার অনুরূপ উদাহরণ কম, বরং আত্মসমর্পণের চিত্রটি বেশি। আনন্দবাজার বিদায়ী পুলিস কমিশনারের মধ্যে যতই ‘বীরত্ব’ আবিষ্কার করুক, আসলে তিনি আত্মসমর্পণেরই পথপ্রদর্শক। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোয় খালি পায়ে ঘুরে বেড়ানো পুলিস কমিশনারকে দেখে পুলিস বাহিনী হতোদ্যমই হয়। বিরোধী দলের সাথে বাক্যালাপ বন্ধ করা স্রেফ রাজনৈতিক বসদের খুশি করার জন্যই। এমনকি গার্ডেনরিচ কাণ্ডেও তার দৃঢ়তার অভাব ফুটে বেরিয়েছে। চোখের সামনে নিরস্ত্র সহকর্মীর অসহায় মৃত্যু সাধারণ পুলিসের মধ্যে বিদ্রোহের কারণ হতে পারে। এটা ঠেকাতেই মুন্নাভাইয়ের নামটি এফ আই আর-এ দিতে বাধ্য হয় পুলিসকর্তারা। ব্যস ঐ পর্যন্ত। পরের দিন মুন্নাভাই ওরফে ইকবাল বুক ফুলিয়েই ঘুরে বেরিয়েছে, কর্পোরেশনের বোরো অফিসে দীর্ঘ সময় ধরে ববি হাকিমের সাথে মিটিং করেছে, সবকিছুই স্বাভাবিক — মুখ্যমন্ত্রী দীঘার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পরিস্থিতি পালটে গেল, জনরোষের বিস্ফোরণে এবং রাজ্যপালের মন্তব্যে। মুখ্যমন্ত্রী ফিরে এলে ইকবালকে আত্মগোপন করার নির্দেশ দেওয়া হলো — কারণ সরকারকে কিছু করতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে একটাই পথ খোলা — কারুর একজনের মাথা কাটতেই হবে। কে হবে সেই হতভাগ্যটি। দুজনের মধ্যে একজন — ববি অথবা নগরপাল। ববি তার কাছে অনেক মূল্যবান। অতএব বাবুর হাতে পারিষদের মুণ্ডচ্ছেদ। অভিমানে বরখাস্ত আই পি এস টি ছুটি নিলেন — এত কিছু করার পর এই পুরস্কার! বরং এই ছুটিতে উনি বসে ভাবতে পারবেন — কি হতো যদি প্রথম থেকেই একজন নির্ভীক পুলিস অফিসার হয়ে তার বাহিনীর সম্মান এবং মনোবল বজায় রাখতে পারতেন? গুজরাটের সঞ্জীব ভাট হতে হবে না, অন্তত যদি দময়ন্তী সেনও হতে পারতেন। নীতিহীন আত্মসমর্পণের জন্য প্রতিদিন আদালতে পুলিস বেআব্রু হচ্ছে। রাজনৈতিক দল নয় — রাষ্ট্রের আইনী স্তম্ভটিই দেখিয়ে দিচ্ছেন আইন রক্ষার স্তম্ভটি কিভাবে অধঃপতিত হয়েছে।
সমস্যা সবচেয়ে বেশি সাধারণ পুলিসকর্মীদের। তাঁদের যাঁরা নেতৃত্ব দেন তাঁরা তাঁদের সবচেয়ে অসহায় জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। দু’দিক থেকেই তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কর্তারা যাই শেখাক আসলে তাঁরা বৃহত্তর সমাজেরই অংশ। সেই বৃহত্তর সমাজ তাকে কোন্ চোখে দেখছে এটাও গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তাঁকে পাঠাচ্ছে ধর্মঘট ভাঙতে। যে ধর্মঘট ডেকেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। পুলিস উর্দি খুলে ঘরে ফিরলে এই ধর্মঘটীরাই তার প্রতিবেশী, বন্ধু, আত্মীয়। অথচ সেই সরকারই তাঁকে অসহায়ভাবে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে সমাজবিরোধীদের হামলার সামনে। সামাজিক প্রত্যাশা, সে এই সমাজবিরোধীদের প্রতিহত করুক। রক্ষা করুক সাধারণ মানুষকে। দুদিক থেকেই পুলিস তার সামাজিক অবস্থান থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। এই বিচ্ছিন্নতা নিয়ে সে বেশি দিন চলতে পারে না। পুলিসকেও ভাবতে হবে। এবং এই ভাবনা কোনো একজনের ভাবনা না, সামগ্রিকভাবেই ভাবতে হবে — তারা কি করবে। সমাজবিরোধীদের কোন রাজনৈতিক চরিত্র থাকে না। থাকে অর্থনৈতিক লক্ষ্য। আইন এড়িয়ে, আইন ভেঙে সে আর্থিক লাভ করে। অথচ সরকার এবং সরকারী দলের থাকে প্রধানত রাজনৈতিক লক্ষ্য। সরকারী নেতাদের নিজেদের আর্থিক লাভটি আনুষঙ্গিক বিষয়। আইনের রক্ষক যখন সমাজবিরোধীকে আইন ভাঙতে দেয়—তারও থাকে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সমাজবিরোধী বোঝে এই সরকার থাকলেই তার লাভ—সে করে খেতে পারবে। তার নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থেই এই সরকারকে রাখা দরকার। যে ছিলো রাজনৈতিক লক্ষ্যহীন সমাজবিরোধী সে এর মধ্য দিয়ে হয়ে ওঠে সরকারের কট্টর সমর্থক। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন কেবল না, এটা দুর্বৃত্তের রাজনীতিকরণ। প্রতিটি পাড়াতে এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তৃণমূলের কট্টর সমর্থক এক দল ‘করে খাওয়া’ দঙ্গল। এরাই শাসক দলের ভৈরববাহিনী, ‘তাজা’ ছেলেদের দল, দিদির একনিষ্ঠ ভক্তবৃন্দ।
অথচ কুড়ি মাস আগে এই তৃণমূলই বিপুল সমর্থন পেয়ে ক্ষমতায় এসেছিলো। তাদের নিয়মিত সমর্থক ছাড়িয়ে সমাজের বিভিন্ন অংশের নতুন সমর্থন পেয়েছিলো তারা। একটি গণতান্ত্রিক দলের স্বাভাবিক প্রবণতা হবে—এই বাড়তি সমর্থনকে যে কোনো ভাবে ধরে রাখা। কিন্তু তৃণমূল একদিনের জন্যেও সেই চেষ্টা করেনি। মুখের সামনের মাছিকে যেভাবে একজন চরম অবজ্ঞা নিয়ে তাড়ায় তৃণমূল তাদের জোটসঙ্গীদের এবং নতুন সমর্থকদের এক অংশকে সেভাবেই তাড়ালো। তৃণমূলের সঙ্গে থাকার পূর্বশর্ত—বিনা বাক্যে তাদের এবং তাদের নেত্রীকে মেনে চলতে হবে। একটি স্বাভাবিক দল যে কাজ করে তৃণমূল ঠিক তার উলটো কাজ করলো। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সি পি আই (এম) আপ্রাণ চেষ্টায় তার সহযোগীদের ধরে রেখেছিলো ৩৪ বছর, এমনকি এখনও—তৃণমূল সে পথে হাঁটেনি। সে সংগঠিত করেছে এই নীতিহীন, অন্ধ, সমাজবিরোধী বাহিনী। এটিই পৃথিবীর সমস্ত স্বৈরাচারীদের বৈশিষ্ট্য। মুসোলিনির ব্ল্যাক শার্টস, হিটলারের ব্রাউন শার্টস, ৭০-৭৭-এ কংগ্রেসের ‘যুগ যুগ জিও বাহিনী’, আর এখন তৃণমূলের ভৈরববাহিনী। সংগঠিত সমাজবিরোধী সমর্থনের ভিত্তিতে আরো ক্ষয় করবে জেনেও তারা এই কাজ করে—কারণ তারা মনে করে জয়ের অস্ত্রে সমস্ত বিরোধীতাকে তারা দমন করে দেবে। গণতন্ত্রকে কোন সুযোগ না দেওয়াই এদের প্রধান রাজনৈতিক দর্শন। এটা এরকম নয়, একটি খারাপ দল, একজন খারাপ নেত্রী হঠাৎ ক্ষমতায় এসে গেছে। এটি একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রবণতা—যার নাম স্বৈরাচার। লড়াইটা কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয় লড়াই স্বৈরাচারী রাজনীতির বিরুদ্ধে। এরা গণতন্ত্রের সামান্যতম বহিঃপ্রকাশকে সহ্য করতে পারে না—তার বিরুদ্ধে এদের অস্ত্র এই সংগঠিত সমাজবিরোধী বাহিনী। আগামী দিনে এরাজ্যে প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং কার্যকলাপ আক্রান্ত হবে। কারণ এই গণতন্ত্রকে তারা ভয় পায়। উদাহরণ হিসাবে ২০-২১শে ফেব্রুয়ারির সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটটি একটি আদর্শ উদাহরণ।
দাবিগুলো ছিলো সর্বভারতীয় এবং প্রধানত কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু কেন্দ্র কিছু বলার আগেই সেই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল রাজ্যের সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং নির্দেশে। কোনো কিছুর বিরুদ্ধাচারণ করার একটি স্টাইল আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব — যাতে ভদ্রতা, সভ্যতা বা শিষ্টাচারের লেশ মাত্র থাকে না। এক্ষেত্রেও তার কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর সর্বশেষ দাওয়াই — নিষিদ্ধ হোক ধর্মঘটী দল এবং ধর্মঘট। এই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে ছিলো কেন্দ্রীয় সরকার, দেশের কর্পোরেটকুল এবং তাদের মিডিয়া। বোঝা গেলো বাইরে জোট ভাঙলেও, অর্থনীতির প্রশ্নে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের জোট অটুট আছে। এই জোটবদ্ধতার বাইরে তৃণমূল নেত্রীর একটি বিশেষ অবস্থান এর মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হলো ধর্মঘট বা ধর্মঘটীদের নিষিদ্ধ করার ইচ্ছার মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী নিঃসন্দেহে কর্পোরেট এবং কর্পোরেট মিডিয়ার হাততালি কুড়োনোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার উচ্চারিত ইচ্ছাটির গভীরতা অনেক বেশি। ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার বিষয়টি পৃথিবীর সমস্ত স্বৈরাচারের প্রথম পদক্ষেপ। গোটা পৃথিবীর স্বৈরাচার বা হিটলার এবং নাৎসি জার্মানির ইতিহাস মুখ্যমন্ত্রী সারা জীবন পড়ে উঠতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। এমনকি রেল ধর্মঘট ভাঙতে গিয়েই এ দেশে জরুরী অবস্থার আগমন এটিও তার বিবেচনায় ছিলো বলে মনে হয় না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর তার প্রয়োজনও হয় না — কারণ তিনি একজন স্বাভাবিক (organic) স্বৈরাচারি। তিনি তার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি (instinct) দিয়েই বোঝেন তার ক্ষমতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সংগঠিত মানুষ। তিনি তার সর্বশক্তি দিয়েই তাই গণতন্ত্রের এই মূল ভিত্তিতে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন। গত কুড়ি মাসে তিনি এবং তার দল ঠিক এই কাজটিই করার চেষ্টা করেছেন। ছাত্র সংসদ থেকে কো-অপারেটিভ, ট্রেড ইউনিয়ন থেকে স্কুল কমিটি। যেখানেই গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটা আছে সেটিকেই ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। এমনকি অপছন্দের মিডিয়াও তার আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি। প্রকাশ্যে এবং নেত্রীর অনুমোদন নিয়ে তৃণমূলের নেতারা বলে বেড়াচ্ছেন তাদের জমিদারিতে পঞ্চায়েতে কোনো বিরোধী দলকে প্রার্থী দিতে দেওয়া হবে না।
কুড়ি মাসে স্বৈরাচার তার এক একটি কুৎসিত পাপড়ি মেলে ধরছে বাংলার বুকে। সর্বশেষ ২০-২১শে ফেব্রুয়ারির ধর্মঘট। গোটা দেশে এ জিনিস কখনও দেখেনি। একটি রাজ্য সরকার তার প্রশাসনের সমস্ত দাঁত ও নখ সহ ঝাঁপিয়ে পড়েছে ধর্মঘটীদের ওপর — সঙ্গে সহযোগী সংগঠিত সমাজবিরোধী সংবলিত তৃণমূল কংগ্রেস।
মুখ্যমন্ত্রী মাইনা কাটার সিদ্ধান্তে উজ্জীবিত কর্মীরা ধর্মঘটীর কান কেটেছে। রাজ্যে ‘ওয়ার্ক কালচার’ ফিরিয়ে আনতে তৃণমূল তাদের নিজস্ব কালচার দেখিয়েছে। হেডমাস্টারকে তার ছাত্রদের সামনে পিটিয়ে রোদে তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছে। অটোচালক থেকে ইঞ্জিনিয়ার, সবজি বিক্রেতা থেকে ইঞ্জিনিয়ার কারোর রেহাই মেলেনি। তৃণমূল এবং তার সরকারের হাত ধরে বাংলা যাত্রা করেছে তালিবানি আফগানিস্তানের দিকে। নরক এক এক করে নতুন দরজা খুলছে বাংলার বুকে।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের জিজ্ঞাসা — এই করে কত দিন? খোঁজ নিলে জানতেন সমস্ত হুমকি সত্ত্বেও ধর্মঘট হয়েছে। আপনার ভয়ের চাবুক মানুষকে রাস্তায় নামাতে পারেনি। কারখানাগুলো খোলেনি, খোলেনি ব্যাঙ্কের দরজা, ইনস্যুরেন্সের গেট, কাজ হয়নি খনিতে, বন্দরে। মাস্টারমশাইদের মতো ছাত্ররাও আসেনি। খোকাবাবু সিনেমা বা পাগলুর নাচ দেখার ফাঁকে একটু-আধটু ইতিহাসও পড়া উচিত। পড়লে দেখতেন বিশ্ব রাজনীতিতে অনেক বড় মাতব্বর, অনেক বড় মাস্তানও এ পথে বিশেষ দূর এগোতে পারেনি। আর আপনি? হরিদাস পাল নামটি পুরুষের, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। পারবেন না। স্বৈরাচারের বুটের তলায় গণতন্ত্র নিকেশ হয় না। আপনার কানকাটা ভৈরববাহিনী দিয়েও কিছু করাতে পারবেন না। ভয়ের মতো, ভয় ভাঙাটাও ছোঁয়াচে — দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে গোটা বাংলা জুড়ে। আর গোটা দেশও এসে দাঁড়াচ্ছে বাংলার পাশে।
অন্ধকারের শক্তি এক পা এক করে নেমে আসছে বাংলার বুকে। অথচ কুড়ি মাস আগে বিপুল ভোট নিয়ে হাসিমুখে হাত নাড়তে নাড়তে রাইটার্সে ঢুকেছিলেন—আর আজ একটা কলেজের ছাত্রদের ভোটকেও পর্যন্ত ভয় পান, একটা গ্রামীণ সমবায়ের ভোটের খবরেও আপনার এবং আপনার দলের বুক কাঁপে। আপনি ধমকে ছাড়া কথা বলতে পারেন না। আপনার দল ভদ্রলোকের ভাষায় কথা বলতে ভুলে গেছে। আপনি হাসলে বোঝা যায়, আপনার হাসি মুখের পেশিতে। ভেতর থেকে আসে না। হিটলার তাও যুদ্ধ বাধিয়ে জার্মানিতে বেকারদের চাকরি দিয়েছিলো। মুসোলিনির আমলে ইতালিতে ট্রেন ঠিক সময় চলতো—আপনার এরকম কোন ‘কৃতিত্ব’ও নেই। আপনি উৎসবের নামে মোচ্ছব করতে পারেন, দীঘার সমুদ্র সৈকতে দলবল নিয়ে পায়চারি করতে পারেন, টালিগঞ্জের নায়িকাকে নিয়ে ধর্মঘটের দিন রাইটার্সের ক্যান্টিনে ধোসা খেতে পারেন, আর ভয় দেখাতে পারেন—আর কিছু করতে পারেন না। আপনি আর আপনার দল যত ভয় দেখাচ্ছে ততো বেশি বোঝা যাচ্ছে—আপনারা নিজেরা ভয় পেয়েছেন। এতোটাই ভয় পেয়েছেন যে, স্বাভাবিক বুদ্ধিও গুলিয়ে যাচ্ছে, যা করছেন সব ভুল। মুখ্যমন্ত্রী নাকি কুড়ি ঘণ্টা জেগে থাকেন, ঘুমোন মাত্র চার ঘণ্টা। ভয় এই বাকি চার ঘণ্টার ঘুমও ছুটে না যায়। একটি হিংস্র, স্বৈরাচার যখন ভয় পায় সে আরো বিপদ ডেকে আনে। এই বিপদের মধ্য দিয়েই রাজ্যকে যেতে হবে, মানুষের দুর্ভোগে চোখের জল পড়বে। কিন্তু কতদিন? মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ তার বিশ্বস্ত গণৎকারদের ডেকে জিজ্ঞাসা করুন—আর কতদিন? মনে হয় না শেষের সে দিন খুব দূরে আছে।
Sunday, February 24, 2013
নীতি বদলের সংগ্রামের বার্তা পৌঁছাতে যাত্রা শুরু দক্ষিণ জাঠার |
নীতি বদলের সংগ্রামের বার্তা পৌঁছাতে যাত্রা শুরু দক্ষিণ জাঠার |
আই এন এন
কন্যাকুমারী, ২৪শে ফেব্রুয়ারি — বিকল্প নীতির দাবিতে দেশজুড়ে সংগ্রামের বার্তা পৌঁছে দিতে শুরু হয়ে গেল সি পি আই (এম)-র জাঠা। দেশের মূল চারটি জাঠার প্রথমটির রবিবার কন্যাকুমারীতে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সি পি আই (এম)-র সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত। দক্ষিণের জাঠার নেতৃত্ব দিচ্ছেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য এস আর পিল্লাই। এদিন জাঠার উদ্বোধনের পর কারাত তাঁর হাতেই পতাকা তুলে দেন।
‘সংগ্রাম সন্দেশ জাঠা’ অর্থাৎ সংগ্রামের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই দেশের চার প্রান্ত থেকে জাঠা বেরিয়ে মিলিত হবে দিল্লিতে। এদিন কন্যাকুমারী থেকে শুরু হলো দক্ষিণের জাঠা। কলকাতা থেকে দিল্লি জাঠার সূচনা ১লা মার্চ, মুম্বাই থেকে দিল্লি ৮ই মার্চ এবং অমৃতসর থেকে দিল্লি ৪ঠা মার্চ শুরু হবে। বড় জাঠার সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যগুলির ছোট ছোট জাঠা এসে মিলিত হবে। মোট ১০হাজার কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করবে জাঠাগুলি। ১৪ই মার্চ রাজধানীতে এসে মিলবে সবক’টি জাঠা। ১৯শে মার্চ রামলীলা ময়দানে হবে কেন্দ্রীয় জনসমাবেশ। উল্লেখ্য, সংগ্রামের বার্তা ছড়িয়ে দিতে শনিবারই আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে দেশের প্রথম উপ-জাঠাটি পথ চলা শুরু করে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পার্টিকর্মীদের এই জাঠার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য তথা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই জাঠা কলকাতায় পূর্বাঞ্চলের মূল জাঠার সঙ্গে মিলবে আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি।
এদিন কন্যাকুমারীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বহু মানুষ এসেছিলেন। দেশের চার প্রান্ত থেকে কেন জাঠা কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা করে কারাত তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউ পি এ সরকারের ধ্বংসাত্মক নীতি দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমানের প্রভূত অবনতি ঘটেছে। এই জাঠার মাধ্যমে খাদ্যের অধিকার, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দলিত-আদিবাসী-সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতো নিপীড়িত মানুষের অধিকার নিয়ে দেশজুড়ে জনমত গড়ে তুলবে সি পি আই (এম)। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও এই জাঠার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে প্রচার চালাবে পার্টি।’’ তিনি মানুষকে এই লড়াই-সংগ্রামে শামিল হওয়ার পাশাপাশি বিকল্প নীতির স্বার্থে আন্দোলনকে আরও জোরদার করার আহ্বান জানান। কারাত পরিশেষে বলেন, ‘‘কেন্দ্রের একের পর এক সরকার ধ্বংসাত্মক নীতি নিয়ে চলেছে। আর তার দায় বহন করতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে। জনবিরোধী ঐ নীতি বদলে প্রকৃত বিকল্প নীতি তুলে ধরতে পারে একমাত্র বামপন্থী এবং গণতান্ত্রিক শক্তিই। দেশজুড়ে আরও লড়াইয়ের বার্তা পৌঁছে দেবেন জাঠার অংশগ্রহণকারীরা।’’
কন্যাকুমারীর মানুষ যেভাবে এই জাঠার উদ্বোধনে উপস্থিত থেকে উৎসাহিত করেছেন সেজন্য শহরবাসীকে অভিনন্দন জানান দক্ষিণের জাঠার নেতা এস আর পিল্লাই। তিনি বলেন, ‘‘ইউ পি এ সরকার যে নীতি নিয়ে চলেছে তাতে ফায়দা লুটছে কর্পোরেট এবং দেশের ধনীরা। অথচ সাধারণ মানুষের সমস্যার দিকে কোনো নজরই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। খেতমজুর, কৃষক, সংখ্যালঘু এবং মহিলাদের বিপাকে ফেলেছে যে নীতি তা বদলের জন্য এখনই বড়সড় আন্দোলনে নামার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এঁদের অধিকার সুরক্ষার তাগিদেই প্রয়োজন বিকল্প নীতির।’’ তাই এই সংগ্রামে দেশের আপামর মানুষকে সি পি আই (এম)-র সঙ্গে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান পিল্লাই।
এদিন জাঠা শুরু আগে সংক্ষিপ্ত ঐ সভায় স্বাগত ভাষণ দেন সি পি আই (এম) তামিলনাডু রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নূর মহম্মদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য কে বরদারাজন। এই জাঠায় থাকছেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য বরদারাজন ও এম এ বেবি, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভি শ্রীনিবাস রাও এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুধা সুন্দরমণ।
কন্যাকুমারীর পর জাঠা এসে এদিন প্রথম থামে নাগেরকয়ালে। সেখানেও বিশাল সমাবেশ হয়।
মাধ্যমিক শুরুর আগে পরীক্ষার্থীদের ভয় দেখালেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী |
মাধ্যমিক শুরুর আগে পরীক্ষার্থীদের ভয় দেখালেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী |
নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২৪শে ফেব্রুয়ারি— সোমবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ পরীক্ষার্থী জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসবে। তারা যখন শেষ প্রহরের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখনই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বললেন, মাধ্যমিক পরীক্ষা ভণ্ডুল হতে পারে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। কোথা থেকে এমন খবর পেলেন শিক্ষামন্ত্রী, প্রশাসনিক পদক্ষেপ না নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এমন চাঞ্চল্য ছড়িয়ে তিনি এতো বড় মাত্রার আশঙ্কার কথা বললেন কেন, তা নিয়ে রবিবার গুরুতর প্রশ্ন উঠে গেল।
সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা রাজ্য প্রশাসনের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। কোনো বিশৃঙ্খলা হলে তার যথাযথ মোকাবিলা করাও প্রশাসনেরই দায়িত্ব। শিক্ষামন্ত্রী তার বদলে শঙ্কা ছড়ানোর বিচিত্র পথ নিয়েছেন এদিন। চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে নিজের দায় ঝেড়ে ফেললেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পরে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে, অভিভাবকদেরও অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হলো। এ এক বিরল নজির। আগে কোনদিন পরীক্ষার ঠিক কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কখনো কেউ করেননি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। তিনি আশঙ্কা করেছেন, নাশকতা হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী কেন এমন বার্তা রাজ্যবাসীকে দিলেন, তার কোন ব্যাখ্যা তিনি দেননি। ব্রাত্য বসু যুক্তি দেখিয়েছেন, যারা শিক্ষক নিয়োগ আটকাতে মামলা করতে পারে, তারা সব কিছুই করতে পারে। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হরবখত মামলা হয়। বামফ্রন্টের আমলেও প্রচুর মামলা হয়েছে। চাকরি প্রার্থীরা মামলা করেন। যদিও তার জন্য শিক্ষক নিয়োগ কোনদিন আটকে ছিল না। শিক্ষামন্ত্রীর এই দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য সম্পর্কে শিক্ষকমহল এবং শিক্ষাবিদরা বলেছেন, এমন মন্তব্য পরীক্ষার্থীদের অসাড় করে দেয়। পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগে শিক্ষামন্ত্রীর উচিত ছিল পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দেওয়া। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়েছে সে কথা অভিভাবকদের জানিয়ে তাঁদের ভার কিছুটা মুক্ত করা।
ব্রাত্য বসুর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে এদিন প্রাক্তন বিদ্যালয় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দে বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী যে কাজ করলেন, তা ঠিক নয়। পরীক্ষার্থীদের এভাবে ভয় দেখানো ফৌজদারি অপরাধ। পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত অনুসারেই তৃণমূল এই কাজ করছে। পরীক্ষাব্যবস্থা বানচাল করতে আগেই ওরা এই চক্রান্ত করেছে। ক’দিন আগে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা ছাত্রদের নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে ওরা গন্ডগোল করেছে। পরীক্ষায় গণটোকাটুকির ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাইছে। তৃণমূল কোনো গন্ডগোল না করলে পরীক্ষা ভালোভাবেই হবে।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সম্পাদক উৎপল রায় বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগেই এমন মন্তব্য কেন? শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নিশ্চয়ই নির্দিষ্ট খবর আছে। সেই গোপন তথ্য তিনি প্রশাসনকে জানান। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের গ্যারান্টি দিন। শিক্ষামন্ত্রীর এই নেতিবাচক বক্তব্যে পরীক্ষার্থীদের ক্ষতি হলো। এর দায় কে নেবে?
উল্লেখ্য, বিরোধীদের ঘাড়ে দায় চাপানোর জন্য আগেও চরম মিথ্যা প্রচারে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ব্রাত্য বসু। ২০১০ সালে ২৮শে মে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরদিনই ব্রাত্য বসুরা প্রেস ক্লাবে বলেছিলেন এই দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে সি পি আই (এম)। পরে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ব্রাত্য বসুরা মিথ্যা কথা বলেছিলেন। মাওবাদী দুষ্কৃতীরাই সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল। শিক্ষামহলের বক্তব্য, মন্ত্রী হবার পরে তাঁর স্বভাব বদলায়নি।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন ব্রাত্য বসু নিজের দায় আগেই ঝেড়ে ফেলে নিজের দলের কাছে বার্তা দিয়ে রাখলেন, যে আমি তো আগেই বলেছিলাম এমনটা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীকেও নতুন করে কোন ব্যাখ্যা দিতে হবে না। তিনি বলবেন, শিক্ষামন্ত্রী তো আগেই তাঁর আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন।
সোমবার পরীক্ষায় বসবে ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৫৯জন পরীক্ষার্থী। ২৫৭১টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ হবে। গত দু’বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদে সর্বসময়ের জন্য কোন সভাপতি নিয়োগ হয়নি। প্রশাসক কল্যাণময় গাঙ্গুলি কাজ চালাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন পরীক্ষা নির্বিঘ্নে গ্রহণ করার জন্য সমস্ত রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসকের ওপর ভরসা রাখতে না পেরে মন্ত্রী এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করছেন বলে শিক্ষকমহল মনে করছেন।
গোপনেই, রাতভর খেটে জাঠাকে অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিলো বক্সিরহাট |
গোপনেই, রাতভর খেটে জাঠাকে অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিলো বক্সিরহাট |
পীযূষ ব্যানার্জি
বক্সিরহাট (কোচবিহার), ২৪শে ফেব্রুয়ারি— দু’-দুটো গেট তৈরি করে রাখা। গোটা ছয়েক ফ্লেক্স তৈরি হয়ে পড়ে আছে। শ’খানেকের ওপর লালঝান্ডা স্রেফ টাঙানোর অপেক্ষা। হাতে হাত মিলিয়ে হাজারো চেনফ্ল্যাগ পথ সাজাতে তৈরি।
প্রস্তুতিতে কোনো খামতি নেই। তবু আসাম-বাংলা সীমান্তের গঞ্জ বক্সিরহাট কোথায় যেন থম মেরে আছে।
সংগ্রাম বার্তা জাঠার প্রস্তুতি সারা হয়েও গোটা বক্সিরহাট তবু খাঁ খাঁ করছে। রবিবারের সন্ধ্যাতেও গোটা তল্লাটে ‘সংঘর্ষ সন্দেশ জাঠা’কে স্বাগত জানানোর ছিটেফোঁটা চিহ্ন নেই।
কোচবিহার থেকে বক্সিরহাট যাওয়ার সময়ই জাঠাকে স্বাগত জানানোর জন্য পরিকল্পনার কথাই শোনাচ্ছিলেন সি পি আই (এম)-র বক্সিরহাট জোনাল কমিটির সম্পাদক ধনঞ্জয় রাভা। কীভাবে গতকাল গুয়াহাটি থেকে রওনা দেওয়া জাঠাকে আসাম সীমান্তের তেনালি মোড় থেকে স্বাগত জানিয়ে আনা হবে বক্সিরহাট জোনাল দপ্তরে। গোটা রাস্তার কোথায় চেনফ্ল্যাগ টাঙানো হবে, কত সংখ্যায় লালঝান্ডা দিয়ে এলাকা সাজানো হবে সব কিছু শুনতে, শুনতে বক্সিরহাটে পৌঁছাতেই সব ভোঁ ভাঁ। গোটা এলাকায় জাঠা নিয়ে কিচ্ছুটি নজরে পড়ছে না।
হাতে সময় বলতে রাতটুকু। সোমবার সকালেই জাঠা পৌঁছে যাবে বক্সিরহাটে। বাংলার সীমান্ত থেকে মাত্র দেড় ঘন্টার দূরে ধুবড়িতে জাঠার যাত্রীরা এদিন রাত্রিবাসের খবরও কারোর অজানা নেই। তাহলে কাল সকালের মধ্যে প্রস্তুতি হবে কী করে?
‘‘চিন্তা করবেন না। কাল সকালে বক্সিরহাটের মানুষের ঘুম ভাঙার আগেই সেজে উঠবে গোটা এলাকা। যেমনটা বলেছিলাম, লালঝান্ডা, চেনফ্ল্যাগ, ব্যানার, ফ্লেক্সে সংগ্রামের বার্তা নিয়েই আমরা বাংলার মাটিতে স্বাগত জানাবো জাঠাকে।’’ প্রত্যয়ী শোনায় ধনঞ্জয় রাভার গলা। সেই প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রকাশ্যে নয়। গোপনে। একটু হলেও লোকচক্ষুর আড়ালে।
আসলে এটাই এরাজ্যের অন্যান্য অনেক এলাকার সঙ্গে তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট এলাকার বাস্তবতা। গতকালই তো তুফানগঞ্জের বামপন্থী পৌরবোর্ডের সদস্যদের চরম হেনস্তা হতে হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ধর্মঘটে অংশ নেওয়া পৌরকর্মচারীদেরও। আর বক্সিরহাট?
২০১১সালের ১৩ই মে ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে সব মিলিয়ে ছয়, সাতবার আক্রমণ হয়ে গেছে পার্টি দপ্তরে। নেতা থেকে কর্মী এমন কেউ বাদ নেই তৃণমূল কংগ্রেসের আক্রমণের তালিকা থেকে। ‘‘এই যে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাকর্সবাদী) বক্সিরহাট জোনাল কমিটি লেখা সাইনবোর্ড দেখছেন এটা বাইরে টাঙানো যাচ্ছে না। প্রতিবার বোমা, পাথর নিয়ে হামলার সময় ভেঙে পাশের খালে ফেলে দিয়ে গেছে। একই অবস্থা শহীদ বেদীর পতাকা তোলার লোহার পাইপের। এখন তাই এগুলো আর বাইরে রাখি না।’’ জোনাল দপ্তরে পিছনে হলঘরে রাখা সাইনবোর্ড, শহীদ বেদীকে দেখিয়ে জানান এলাকার পার্টিকর্মীরা।
প্রকাশ্যে এখানে এলাকায় দপ্তরের পরিচিতি রাখতে দেওয়া হয় না। বিকাল ৪টা থেকে বড়জোর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত যেখানে পার্টি জোনাল কমিটির দপ্তরকে খুলে রাখতে বাধ্য হন পার্টিকর্মীরা, সেখানে জাঠাকে স্বাগত জানানোর কাজ করাটা যে কতটা কঠিন তা এলাকার পার্টিকর্মীরাই ভালো জানেন। তাহলে কী কোনো রকমে জাঠাকে বিদায় করেই শেষ হবে অনুষ্ঠান?
না। তার কোনো সম্ভাবনা রাখছে না সি পি আই (এম) কর্মীরা। ‘‘সন্ত্রাসের আবহাওয়ার কারণেই মানুষের কাছে জাঠার জন্য সাজানোর কাজ করতে পারলাম না। দু’দিন আগে থেকে করলে সব নষ্ট করে দিত। তাই এলাকা সাজানোর সব কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি। রাত পার করে সোমবার সকালেই সব উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে নেব।’’ বলছিলেন বক্সিরহাটের পার্টি নেতৃত্ব।
এদিন কোচবিহার জেলা সি পি আই (এম)র দপ্তরে এই নিয়েই এক সাংবাদিক বৈঠকে পার্টির জেলা কমিটির সম্পাদক তারিণী রায় বলছিলেন,‘‘জাঠা নিয়ে আমরা আমাদের কর্মসূচীর কথা লিখিতভাবে জেলার পুলিস, প্রশাসনকে জানিয়েছি। চলতি সন্ত্রাসের কথা জানিয়ে ফের পুলিসসুপারকে আবার আমাদের তরফ থেকে অবহিত করেছি।’’
সোমবার সাড়ে ১০টা নাগাদ গুয়াহাটি থেকে শুরু হওয়া জাঠা প্রবেশ করবে এরাজ্যে। জাঠার সঙ্গে থাকছেন আসামের প্রবীণ সি পি আই (এম) নেতা উদ্ধব বর্মণ। বক্সিরহাটে জাঠাকে স্বাগত জানিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য নিরুপম সেন। বক্সিরহাট হয়ে জাঠা যাবে তুফানগঞ্জে। সেখানকার কমিউনিটি হলে আয়োজিত সভায় উপস্থিত থাকবেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃদুল দে। তুফানগঞ্জ হয়ে জাঠা পৌঁছাবে কোচবিহার শহরে। বিকাল ৫টা কোচবিহার শহরের সুকান্ত মঞ্চে আয়োজিত হবে আরও একটি সভা। সোমবার রাতে কোচবিহার শহরেই রাত কাটাবেন জাঠাযাত্রীরা।
মঙ্গলবার সকালে কোচবিহার হয়ে জলপাইগুড়ির ফালাকাটায় পৌঁছাবে জাঠা। গুয়াহাটি থেকে শুরু হওয়া এই জাঠা আগামী ১লা মার্চ কলকাতা থেকে দিল্লির মূল জাঠার সঙ্গে মিলিত হতে চলেছে।
সংগ্রামের বার্তা দেশের রাজধানীতে বয়ে নিয়ে যেতে তাই কোনো খামতি রাখতে চায় না বক্সিরহাট। সন্ত্রাসের আবহের মধ্যেই বাংলা আসাম সীমান্তের এই গঞ্জে চলছে প্রস্তুতি। ধুবড়ি থেকে জাঠা রওনার মুহূর্তে সেজে উঠবে আসামের ধুবড়ি আর কোঁকরাঝাড় জেলার লাগোয়া বক্সিরহাট। জাঠার যাত্রীদের স্বাগত জানাতে জড়ো হবেন এলাকার মানুষও।
সন্ত্রাসের লাইসেন্স
সন্ত্রাসের লাইসেন্স
পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসছে। আগামী এপ্রিল মাসের শেষ থেকে মে মাসের মধ্যে পঞ্চায়েতের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার কথা। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচার প্রস্তুতি শুরু করেছে বামপন্থীরা। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য ছলে বলে কৌশলে দখল করতে হবে তিনটি স্তরের পঞ্চায়েত। সেই কারণে ভয় পাইয়ে দেওয়ার পথ নিয়েছে তৃণমূল। কেন না তৃণমূল নিজেরাই সাধারণ মানুষকে ভয় পায়। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জবরদখল করার রাজনীতি শুরু করেছে তৃণমূল। সন্ত্রাসের এই রাজনীতি চলছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত সর্বত্র। কোথাও সি পি আই (এম ) নেতা, কর্মী বা সমর্থককে খুন করা হচ্ছে। শনিবার কোথাও বা সি পি আই (এম)-র নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তৃণমূলের আক্রমণে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘিতে প্রাণ হারিয়েছেন গরিব কৃষক গোপাল মাকাল। সি পি আই (এম) সমর্থক কমরেড গোপাল মাকালকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে খুন করে তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল পরিচালিত মথুরাপুর ২নং পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির উপস্থিতিতে এবং প্রত্যক্ষ মদতে এই খুন করা হয়। শুধুমাত্র খুনই নয়, সন্ত্রস্ত করে তোলার আরও অনেক পথ নিয়েছে তৃণমূল। ঐ একই দিনে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ পৌরসভায় বেআইনীভাবে নিয়োগের দাবিতে সি পি আই (এমর) কাউন্সিলরদের ঘেরাও করে রাখে তৃণমূল। এখানেও পুলিস নীরব দর্শক। ঘেরাও হয়ে থাকা কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যান অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রশাসন হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বোধ করে না। কারণ তৃণমূল কর্মীদের এই ধরনের হামলা, আক্রমণ, নিগ্রহ, অত্যাচারের লাইসেন্স দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি স্বয়ং। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলপি থানার মশামারি এলাকায় ইটভাটার শ্রমিক গোপাল মাঝির চোখ উপড়ে নিয়েছে তৃণমূলীরা। তাঁর অপরাধ সাধারণ ধর্মঘটে শামিল হওয়া। বুধ ও বৃহস্পতিবার ধর্মঘট করার জন্য পরের দিন থেকে কুলপি অঞ্চলের ৪৪টি ইটভাটা বন্ধ রেখেছে তৃণমূলীরা।
বিরোধীদের ওপর আক্রমণ ছাড়াও তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলেও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকা। তৃণমূলের কর্মী ও নেতাদের সঙ্গে থাকছে পরিচিত দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য এবং তৃণমূলী অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে এরাজ্যে এখন তৃণমূলী নেতা এবং সাধারণ মানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই। রিষড়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লোকাল ট্রেনের মধ্যে বসে থাকা রিষড়া পৌরসভার তৃণমূলী কাউন্সিলর বিজয় মিশ্রকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। তাঁকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা গুলি ছোঁড়ে। যাত্রীভর্তি ট্রেন এবং স্টেশনে বেপরোয়াভাবে গুলি চালানোর মত ঘটনা এখনই ঘটছে পশ্চিমবঙ্গে। আক্রমণের লক্ষ্য ঐ কাউন্সিলর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ঐ পৌরসভায় বেআইনী কার্যকলাপ, সিন্ডিকেট গঠন প্রভৃতি নিয়ে তৃণমূলে বিবাদ বেঁধেছে। সেই অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে কাউন্সিলরকে খুন করার চেষ্টাতে দ্বিধা করছে না। রেল স্টেশনে প্রকাশ্যে এই গুলিচালনা খুব স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ সমস্ত মানুষকে আতঙ্কিত এবং সন্ত্রস্ত করে তুলছে। গত বছর ২২শে ফেব্রুয়ারি বর্ধমান শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা হত্যা করেছিলো সি পি আই (এম) নেতা প্রদীপ তা এবং কমল গায়েনকে। জনপ্রিয় এই দুই নেতাকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিলো তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা। তারপর থেকে এক বছর কেটে গেছে। এই এক বছরের মধ্যে এই তৃণমূল দুষ্কৃতীদের সন্ত্রাস বেড়ে চলেছে গোটা রাজ্যে। দুষ্কৃতীদের নিয়েই দলীয় বাহিনী তৈরি করেছে তৃণমূল। স্কুল, কলেজ, ইউনিয়ন, সমবায় থেকে পৌরসভা পঞ্চায়েত সব নির্বাচনেই গায়ের জোর দেখাচ্ছে তৃণমূল। দুষ্কৃতী বাহিনীদের ব্যবহার করে নির্বাচনে জেতার পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল। সন্ত্রাসের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অর্থও ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে নির্বাচনে জেতার জন্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দু’মাস আগে থেকেই সেই সন্ত্রাসের প্রস্তুতিই শুরু হয়েছে ব্যাপকভাবে। মানুষই একজোট হয়ে এই আক্রমণকে প্রতিহত করতে পারে।
তুফানগঞ্জ পৌরসভা অস্থায়ী নিয়োগে ২৪ জনের নাম জোর করে লিপিবদ্ধ করালো তৃণমূল
তুফানগঞ্জ পৌরসভা অস্থায়ী নিয়োগে ২৪ জনের নাম জোর করে লিপিবদ্ধ করালো তৃণমূল
নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার, ২৪শে ফেব্রুয়ারি — দীর্ঘ সাড়ে ১১ঘণ্টা একটি ঘরের মধ্যে চেয়ারম্যানসহ ৮ জন কাউন্সিলরকে আটকে রেখে তৃণমূলের ২৪ জন সক্রিয় কর্মীকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত বোর্ড মিটিংয়ের খাতায় লিপিবদ্ধ করানো হলো। কোচবিহার জেলায় বামফ্রন্ট পরিচালিত তুফানগঞ্জ পৌরসভায় শনিার এই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। ওই দিন ছিলো পৌরসভার বোর্ড মিটিং। তুফানগঞ্জ শহরে তৃণমূলের দলীয় সভাপতি তাঁর প্যাডে ২৪ জনকে অস্থায়ী নিয়োগের জন্য নির্দেশ দিয়ে একটি চিঠি পাঠান পৌরসভার চেয়ারম্যান সুভাষ ভাওয়ালকে। সরকারী যাবতীয় নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এভাবে নিয়োগের প্রশ্নে রাজি হননি চেয়ারম্যানসহ বামফ্রন্ট কাউন্সিলররা। কিন্তু বোর্ড মিটিংয়ে তৃণমূলের ৪ জন কাউন্সিলর ওই ২৪ জন দলীয় কর্মীকে নিয়োগের জন্য চাপ দিতে থাকেন। অবশ্য তাঁরা সফল হননি। শেষে বোর্ড মিটিং ছেড়ে বেরিয়ে যান তৃণমূলের ৪ জন। শহরের ঐতিহ্যবাহী হেরিটেজ ভবনে সভা চলছিলো। ৪ জন কাউন্সিলর বেরিয়ে যাওয়ার পর বেশকিছু তৃণমূলকর্মী বোর্ড মিটিংয়ে ঢুকে পড়ে। চেয়ারম্যানসহ ৮ জন কাউন্সিলরের মোবাইল ফোনে কল করতে বাধা দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিস এবং প্রশাসনের কর্তাদের সামনে রেখে ৪ জন কাউন্সিলর, তৃণমূল কর্মীরা জোর করে বোর্ড মিটিংয়ের খাতায় ২৪ জনের নিয়োগের সিদ্ধান্ত লিখিয়ে নেন। এভাবে বলপূর্বক, বেআইনীভাবে ২৪ জনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত লিখিয়ে নেওয়ার তীব্র নিন্দা করেছেন সি পি আই (এম) কোচবিহার জেলা কমিটির সম্পাদক তারিণী রায়।
রবিবার জেলায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তারিণী রায় ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তুফানগঞ্জ পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রমেশচন্দ্র সরকার, সি পি আই (এম) জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমসের আলি, পৌরসভার সি পি আই (এম) কাউন্সিলর বিমল ডাকুয়া এবং কোচবিহার পৌরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা। সাংবদিক বৈঠকে তুফানগঞ্জের পৌরসভার চেয়ারম্যান সুভাষ ভাওয়ালের উপস্থিত থাকবার কথা থাকলেও গতকালের টানা সাড়ে এগারো ঘণ্টা ঘেরাওয়ের পর এদিন তিনি অসুস্থ বোধ করেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি বিশ্রামে ছিলেন।
এদিন সকালে চেয়ারম্যান সুভাষ ভাওয়াল তাঁর নিজের বাড়িতে বসে বলেন, তৃণমূলীরা গত কয়েকদিন ধরেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ৮১ জন তৃণমূল কর্মীকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগের দাবি করেন। তাঁকে টেলিফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।
শনিবার বেলা ১১টায় পৌরসভার ‘হেরিটেজ ভবনে’ কাউন্সিলরদের মাসিক বৈঠক শুরু হয়। তখন থেকেই ঘেরাও কর্মসূচী শুরু হয়। মাসিক সভায় তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা বিশ্বজিৎ সাহাসহ তৃণমূলের ৪ কাউন্সিলর দাবি করেন, তৃণমূলের শহর সভাপতি হিরণ্ময় চ্যাটার্জি দলীয় প্যাডে যে ৬ তৃণমূল কর্মীর তালিকা গত ডিসেম্বর মাসে জমা দিয়েছে সেই ৬ জন সহ মোট ২৪ জনকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করতে হবে। তৃণমূলের অবৈধ দাবির কাছে নতি স্বীকার না করায় বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ সভা থেকে ওয়াক আউট করে ৪ তৃণমূল কাউন্সিলর। এরপরই তৃণমূলকর্মীরা ‘হেরিটেজ ভবনে’ ঢুকে পড়ে ঘেরাও-এ নামে। জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি। এক সময়ে তৃণমূল কর্মীরা কাউন্সিলরদের চেয়ার পর্যন্ত কেড়ে নেয়। দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন ৮কাউন্সিলর।
তৃণমূলীদের অমানবিক ব্যবহারে রাত ৭টা নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৭৫ বছর বয়সী প্রবীণ কাউন্সিলর ধীরেন সাহা অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স ডাকতেও বাধা দেয় তৃণমূল কর্মীরা। তখন বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যান তাঁর গাড়িতে অসুস্থ কাউন্সিলরকে মহকুমা হাসপাতালে পাঠান। উচ্চ রক্তচাপের রোগী ধীরেন সাহার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রবিবারও তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চেয়ারম্যান এদিন বলেন, ২০০৮-২০০৯ সালে স্টেট আরবান ডেভলপমেন্ট এজেন্সির অনুমতি নিয়ে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে ৭৮ জন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়। মাসিক ১৫০০ টাকা মজুরি পান অস্থায়ী শ্রমিকরা। একইভাবে টোল গেট থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য একই মজুরি হারে ২৪ জনকে নিয়োগ করা হয়। প্রতিটি নিয়োগ হয়েছে আবেদনের ভিত্তিতে ইন্টারভিউর মধ্যমে।
অবৈধ নিয়োগের দাবি মেনে না নেওয়ায় রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ ১৯৩২ সালে তৈরি রাজ আমলের হেরিটেজ ভবনের জানালা ভাঙচুর করে ঘেরাওকারিরা। ঐতিহ্যবাহী হেরিটেজ ভবনও রেহাই পায়নি ঘেরাওকারিদের থেকে। মারমুখী তৃণমূলের ৪ কাউন্সিলর রাত ১১টা নাগাদ ফের ফিরে এসে আবার বোর্ডসভা ডাকতে বাধ্য করে। এবং বিরোধী দলনেতা বিশ্বজিৎ দে-র বয়ান অনুযায়ী পুলিসের ওসি এবং অতিরিক্ত মহকুমা শাসকের উপস্থিতিতে লিখতে বাধ্য করা হয়। জোর করে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে লিখিয়ে নেওয়ার দাবি মেনে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না বলে চেয়ারম্যান এদিন মন্তব্য করেন।
তুফানগঞ্জ পৌরসভায় অবৈধ নিয়োগের নিন্দা করে কোচবিহার পৌরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা রবিবার বলেন, তৃণমূল ও কংগ্রেস পরিচালিত কোচবিহার পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে ১৮৬টি শূন্যপদ রয়েছে সেখানে কর্মী নিয়োগের ব্যর্থ পৌরসভা ও রাজ্য সরকার। তৃণমূলীরা রীতিনীতির তোয়াক্কা করে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে আন্দোলনের নামে দীর্ঘ সাড়ে এগারো ঘণ্টা ঘেরাও এবং হেরিটেজ ভবন ভাঙচুরের নিন্দায় সরব হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ও তুফানগঞ্জের বুদ্ধিজীবী মহল।
তুফানগঞ্জের বি জে পি নেতা পুষ্পেন ডাকুয় এদিন বলেন, আন্দোলনের নামে অসভ্যতা বরদাস্ত করা যায় না। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা দুলাল গোপ বলেন, অবৈধ নিয়োগের জন্য এধরনের হামলা রোধে প্রশাসনের ভূমিকা লজ্জাজনক। আর এস পি নেতা সমীর চক্রবর্তী বলেন, যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গুণ্ডা নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁর দলের কর্মীরা তো একাজ করবেই। গুণ্ডামি রুখতে প্রতিরোধ গড়বেন মানুষই।
তুফানগঞ্জের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অমর বসাক বলেন, রাজনীতির বাইরে থেকেও বলছি, আন্দোলনের নামে এধরনের ঘটনা লজ্জাজনক। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা গেছে। আরেক শিক্ষাবিদ রতন গাঙ্গুলি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দাবির সমর্থনে আন্দোলন হতে পারে। যেভাবে মানবিক প্রবৃত্তি নিচে নেমে যাচ্ছে ভাবা যায় না। এসব ঠেকাতে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষেও রাজ্যে বাড়ছে নৈরাজ্য: বিমান বসু
শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষেও রাজ্যে বাড়ছে নৈরাজ্য: বিমান বসু
রাহুল মজুমদার: রিষড়া, ২৪শে ফেব্রুয়ারি— যাদের নীতি নেই, আদর্শ নেই, কর্মসূচী নেই তাদের স্বার্থের সংঘর্ষ তো লাগবেই। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার ব্যা৪পক অবনতিতে নৈরাজ্যের যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে শাসকদলের গোষ্ঠীসংঘর্ষও ব্যাঘপকভাবে দায়ী। রবিবার রিষড়া রবীন্দ্রভবনে একথা বলেন সি পি আই (এম) রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে কমিউনিস্ট পার্টির কর্মীদের যে বর্ধিত ভূমিকা, তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন সমাজ গড়ে তুলতে হলে নতুন মানুষ গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে। আর সে কাজের দায়িত্ব নিতে হবে কমিউনিস্ট পার্টিকেই।
এদিন সি পি আই (এম) হুগলী জেলা কমিটির উদ্যোগে রিষড়া রবীন্দ্রভবনে কমরেড পরিতোষ চট্টোপাধ্যায় মার্কসীয় অনুশীলন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বিমান বসু। তিনি এখানে পার্টিশিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বললেন, আমাদের অনুসরণ করতে হবে সেই মানুষদের জীবনকে যাঁরা প্রকৃতই ছিলেন পার্টি-শিক্ষক। এই প্রশ্নেই তিনি বি টি রণদিভের উদ্ধৃতি টেনে এনে বলেছেন, আত্মশিক্ষা ছাড়া মার্কসীয় শিক্ষা অর্জন করা যায় না। বলেছেন, শুধুমাত্র শিক্ষাশিবিরে নয়, নিয়মিত আত্মশিক্ষা চাই। আর তারই সঙ্গে পার্টিশিক্ষার প্রয়োগ চাই ব্যক্তিজীবনে।
হুগলী জেলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা কমরেড পরিতোষ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ শেষ হচ্ছে এই বছরেই। সেই উপলক্ষেই এদিন সি পি আই (এম) হুগলী জেলার উদ্যোগে কমরেড পরিতোষ চট্টোপাধ্যায় মার্কসীয় অনুশীলন কেন্দ্রের উদ্বোধন হলো। জেলার পার্টিকর্মী সংগঠকদের ধারাবাহিক পার্টি-শিক্ষার লক্ষ্য নিয়েই এই মার্কসীয় অনুশীলন কেন্দ্রের উদ্বোধন। জেলার পার্টিনেতা সুনীল সরকার এই স্থায়ী পার্টিশিক্ষা কেন্দ্র সম্পর্কে বললেন, সারা বছর এই শিক্ষাশিবির পরিচালিত হবে, যেখানে ধাপে ধাপে সমস্ত জোনাল ও লোকাল স্তরের পার্টি সংগঠকরা শিক্ষা নেবেন এবং তাঁরাও পরবর্তী সময়ে পার্টিক্লাস পরিচালিত করবেন। আগামী ৩১শে মার্চ রিষড়া রবীন্দ্র ভবনে কমরেড পরিতোষ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠান হবে।
এদিন এই মার্কসীয় অনুশীলন কেন্দ্রের উদ্বোধন করতে গিয়ে বিমান বসু বলেছেন, স্বার্থত্যাগী ভাবনার অভাব আছে আজ একথা ঠিক। কিন্তু সেই স্বার্থত্যাগী ভাবনার নজিরও রয়েছে। উদারবাদী দৃষ্টিতে নয়, কমিউনিস্ট দৃষ্টিতে পার্টির কাজ করতে হবে। বললেন, সরকারে থাকা না থাকার ওপর পার্টি নির্ভর করে না। এই মুহূর্তে আমাদের পার্টির কাজ পরিচালনা করতে অগুন্তি পার্টি শিক্ষক চাই। আর তাই পার্টিকর্মীদের নিয়মিত পড়াশোনাটাও অবশ্য জরুরী। বললেন, রাজ্যগতভাবেও একটা স্থায়ী পার্টি স্কুল গড়ার ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কাজ চলছে। যেখানে আমরা সারাক্ষণ পার্টিশিক্ষার কাজ চালিয়ে যাব।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানা-বোঝার প্রসঙ্গেই এদিন পার্টির রাজ্য সম্পাদক বলেছেন পার্টি পত্রপত্রিকা পড়া জরুরী পার্টিকর্মীদের জন্য। কেন দেশজুড়ে সংগ্রাম বার্তা জাঠা সংগঠিত করছে সি পি আই (এম) তার ব্যাখ্যা করতে গিয়েই এদিন তিনি বললেন কালই সংসদে সরকারের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে যে প্রকৃতই চড়া মূল্যবৃদ্ধির শিকার আজ গোটা দেশ। শুধু তাই নয়, উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলির মধ্যে সবচাইতে বেশি মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে এদেশেই। আসলে দাম চড়ানো হয়েছে। অজুহাত তেল কোম্পানির লোকসান হচ্ছে। কিন্তু না, কোন লোকসানই আজ পর্যন্ত হয়নি তেল কোম্পানিগুলির। তাঁর প্রশ্ন, দফায় দফায় পেট্রোল ডিজেলের দর চড়ালে কি দাম নিচে নামবে? এভাবে জ্বালানির দাম বাড়ালে কি জিনিসপত্রের দাম কমবে?
কেন্দ্রের এই জনবিরোধী নীতির বিরোধিতাতেই গত ২০-২১শে ধর্মঘট প্রসঙ্গে তিনি বললেন, এখানেই শেষ নয়। এই ধর্মঘটের পরও রাজ্যে বামপন্থীদের ওপর আক্রমণ চলছে লাগাতার। আজ আর শুধু বামপন্থীদের ওপর নয়, সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে। কৃষক আত্মহত্যা চলছে। চলছে নারীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ। এই নৈরাজ্যের পরিস্থিতিতেই রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে শুরু হয়েছে গোষ্ঠী লড়াই।
রবিবার রিষড়া রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত এই মার্কসীয় অনুশীলন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শান্তশ্রী চ্যাটার্জি। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ পার্টিনেতা বিনোদ দাস, মিতালী কুমার, বলাই সাঁবুই, দিলীপ চ্যাটার্জি প্রমুখ। এই মার্কসীয় অনুশীলন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে হুগলী জেলার তিন কমিউনিস্ট নেতার জীবন প্রসঙ্গ। কমরেড বিজয় মোদক, কমরেড মহীতোষ নন্দী এবং কমরেড পরিতোষ চট্টোপাধ্যায় জেলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের এই তিন পথিকৃতের জীবন অনুসরণ করার কথা বলেছেন নেতৃবৃন্দ।
ARTISTS VENT OUTRAGE ON GANGRAPE, SOCIAL ILLS ON DELHI VARSITY WALL
ARTISTS VENT OUTRAGE ON GANGRAPE, SOCIAL ILLS ON DELHI VARSITY WALL
Five hundred artists came together on Sunday to express their outrage at the brutal gangrape in December last of a 23-year-old girl as well as on other social evils like crime and corruption, by painting a one kilometre long wall in north campus of Delhi University here.
The wall, sectioned off into 138 parts, saw individual or groups of graphic artists and painters creating murals on a common theme “Design the Change.”
Courtesy: The Hindu
Subscribe to:
Posts (Atom)