(CLICK ON CAPTION/LINK/POSTING BELOW TO ENLARGE & READ)

Sunday, April 28, 2013

SARADHA AGENT COMMITS SUICIDE AGAIN: সারদায় টাকা রেখে সর্বস্বান্ত,আত্মঘাতী আরেক আমানতকারী


সারদায় টাকা রেখে সর্বস্বান্ত,আত্মঘাতী আরেক আমানতকারী

নিজস্ব প্রতিনিধি,গণশক্তি

পুরুলিয়া, ২৭শে এপ্রিল—সারদায় গচ্ছিত টাকা ফেরত পাওয়ার কোনো আশা না দেখে আত্মঘাতী হলেন আরও এক আমানতকারী। পুরুলিয়ার বলরামপুরের বাসিন্দা তপন বিশ্বাস (৩৫) শুক্রবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। 

রাজ্যে চলতি চিট ফান্ড কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত এজেন্ট ও আমানতকারী মিলিয়ে পাঁচজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে গেল। এর আগে গত ২০শে এপ্রিল দুর্গাপুরের মায়াবাজারের যাদব মাজি (৩৩), পরদিনই দক্ষিণ ২৪পরগনার বারুইপুরে এক আমানতকারী ঊর্মিলা প্রামাণিক ও সাগরের বাসিন্দা সীতারাম মণ্ডল নামে এক এজেন্ট আত্মহত্যা করেন। মহিলাসহ এই আত্মহত্যার পথে যেতে বাধ্য হওয়া এই তিনজনই সারদা চিট ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত। সারদা ছাড়াও ‘সানমার্গ’ চিট ফান্ডেরও এক এজেন্ট গতকাল আত্মহত্যা করেন। বর্ধমানের গলসীতে আত্মহত্যাকারী যুবকের নাম শুভঙ্কর বিশ্বাস (২০)।

মেয়াদী ও স্থায়ী আমানত মিলিয়ে সারদা চিট ফান্ডে ৪লক্ষ টাকা গচ্ছিত রেখেছিলেন পেশায় চাঁদশী চিকিৎসক তপন বিশ্বাস। কষ্টের টাকা আমানত রেখে ‘যা গেছে, তা গেছে’ বলে মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো উড়িয়ে দিতে পারেননি। সারা রাজ্যজুড়ে সারদা চিট ফান্ডের অবস্থা দেখে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তপন বিশ্বাসের দাদা শক্তিপদ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘তার ভাইয়ের অকাল এই মৃত্যুর জন্য দায়ী সারদা গোষ্ঠী। সারদা কাণ্ডকারখানা দেখার পর থেকেই কথা বলা কমিয়ে দিয়েছিল। মানসিক অবসাদে ভুগছিল। চিট ফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে বলরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ 

বলরামপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার হাটতলায় বাড়ি তপন বিশ্বাসের। তাঁর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সুতপার বয়স ১১। তার থেকে ছয় বছরের ছোটো মেয়ে সুকৃতি। এই দুই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সারদায় টাকা জমাচ্ছিলেন তপন বিশ্বাস। মৃতের স্ত্রী পারুল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘অনেক কষ্ট করে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে টাকা রাখছিলেন। এখন কীভাবে দুই মেয়েকে বড় করবো!’’ শুক্রবারও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পরামর্শ ছিল, ‘‘প্যানিক হবেন না। আমাদের সরকার ছিল বলে মানুষ বেঁচে যাবেন।’’ আর এদিন তপন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে জড়ো হওয়া মানুষের ভিড় থেকেই শোনা যাচ্ছিল, এই আত্মহত্যার জন্য দায়ী রাজ্য সরকারই। রাজ্যের মন্ত্রীদের মদতে বলরামপুরে তাদের ব্যবসা দিনের পর দিন বাড়িয়ে গেছে সারদা গোষ্ঠী। 

শুক্রবার রাতেও বিষণ্ণ মনে বাড়ি ফিরেছিলেন তপন বিশ্বাস। স্ত্রীকে রাতের খাবার দিতে বলে দোতলায় নিজের ঘরে চলে গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পরে খাবার নিয়ে ঘরে ঢোকার সময়ই পারুল বিশ্বাসের চোখে পড়ে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় দড়ি দিয়ে তপন বিশ্বাস ঝুলছেন। স্ত্রীর চিৎকারেই জড়ো হন বাড়ির লোকজন। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। ‘‘লাভের আশায় টাকা রেখেছিলেন। সেখানে সর্বস্বান্ত হওয়াতেই এই আত্মহত্যা।’’ কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছেন পারুল বিশ্বাস।

শনিবার সদর হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর নিয়ে আসা হয় বলরামপুরের বাড়িতে। সেখানে বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সকলেরই কথা, এই মৃত্যুর ঘটনায় সারদা চিট ফান্ডের মতো দায় এড়াতে পারে না রাজ্য সরকার। জেলার পুলিস সুপার সি সুধাকর অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘বলরামপুর শহরে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে এই আত্মহত্যার সঙ্গে সারদা গোষ্ঠীর যোগ আছে কী না তা তদন্ত না করে বলা যাবে না।’’ বলরামপুর এলাকায় আরও অনেক মানুষ এই চিট ফান্ড গোষ্ঠীর প্রতারণার শিকার। ক্ষুব্ধ আমানতকারীদের ভয়ে আতঙ্কিত সারদা গোষ্ঠীর স্থানীয় এজেন্টরাও।

No comments:

Post a Comment