(CLICK ON CAPTION/LINK/POSTING BELOW TO ENLARGE & READ)

Sunday, April 28, 2013

SARADHA GROUP[: মিথ‌্যা প্রতিশ্রুতি নয়, আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর দাবিতে মিছিল বহরমপুরে|


মিথ‌্যা প্রতিশ্রুতি নয়, আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর দাবিতে মিছিল বহরমপুরে|

নিজস্ব প্রতিনিধি,গণশক্তি

বহরমপুর ২৭শে এপ্রিল— বিড়ি শ্রমিক হালেমা, তামেজাদের মতো বহু মানুষের তিলতিল করে জমানো টাকা আত্মসাৎ করে সারদার এজেন্ট বেপাত্তা। হরিহরপাড়া থানার সাহাজাদপুর গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ, এই ঘটনার পর থেকে তাঁদের বাড়িতে জুটছে নানা গঞ্জনা। এমনকি প্রতারিত মহিলাদের অনেকে বাড়ির লোকের চাপে বাড়িছাড়াও হয়েছেন। শুক্রবার সকালে তাই বাধ্য হয়ে শাহাজাদপুরের প্রতারিত মহিলারা সারদার এজেন্ট জাকির হোসেন খানের বাড়িতে চড়াও হন। মানুষের এই ক্ষোভের আঁচ পেয়ে জাকির বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। ক্ষুব্ধ মানুষ সেই পরিবারের লোকজনকে আটকে রেখে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। পরে হরিহরপাড়া থানার পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে গেলে তাঁরাও ঘেরাও হয়ে পড়েন। মানুষের সম্মিলিত ক্ষোভের কাছে পুলিস কার্যত অসহায় অবস্থায় পড়ে। শেষে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি পেয়ে প্রতারিত মানুষজন পুলিসকে ছেড়ে দেন।

শুধু সারদায় নয়, গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন কিপট্রন ইন্ডাস্ট্রিজের এক পরিচালক শম্পা বিশ্বাসসহ ৬জন কর্মী। বহরমপুর পঞ্চাননতলার অফিস থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে বহরমপুর থানার পুলিস। এদিন অভিযুক্তদের বহরমপুর সি জি এম আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তদের তিনদিনের পুলিসী হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। বেশ কিছুদিন ধরেই এই সংস্থার দেওয়া চেক বাউন্স করছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ জানান।

এদিকে, শনিবার সারদা’র আমানতকারী ও এজেন্ট বাঁচাও কমিটির ব্যানারে বহরমপুরে পথে নামলো হাজার হাজার যুবক-যুবতী। তাঁদের একটাই দাবি, কোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয় সরকারকে সমস্ত আমানতকারীর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আর যাদের জন্য আজ তাঁরা পথে বসেছেন তাদের প্রত্যেককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এদিন বহরমপুর স্কোয়ার ফিল্ডে এক সংক্ষিপ্ত সভা থেকে তাঁরা তাঁদের এই দাবির সপক্ষে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিন তাঁরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন— তাঁদের প্রতিবাদ আন্দোলন যাতে সংগঠিত না হতে পারে তারজন্য পুলিস দিয়ে ভয় দেখিয়ে এই আন্দোলন দমনের চেষ্টা হচ্ছে। নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যেভাবে এজেন্ট ও আমানতকারীরা একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন তা প্রশাসনকে চরম অস্বস্তিতে রেখেছে।

বহরমপুর কান্তনগরের অচিন্ত্য দাস এদিন অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী পাঁচশো কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করে আমাদের মুখ বন্ধের মিথ্যা চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিনি ভালোভাবেই জানেন যে, সারদা কোম্পানি শুধুমাত্র আমার মতো গরিব মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাই তার এই পাঁচশো কোটি টাকার প্যকেজ ঘোষণা থুতু দিয়ে ছাতু ভেজানোর শামিল। তিনি বলেন, তৃণমূলের মন্ত্রী সাংসদরা এই ক’বছরে সারদা কোম্পানি থেকে যে পরিমাণ টাকা হাতিয়েছেন তা গ্রাহকদেরই জমানো টাকা। মুখ্যমন্ত্রী আগে সেই টাকা উদ্ধার করুন, তারপর না হয় অন্য কথা বলবেন। নানাভাবে এই ঘটনার দৃষ্টি যে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে তা স্পষ্ট হয়েছে সারদার গ্রাহক-আমানতকারীদের কথাতেই। ভগবানগোলার এজেন্ট আব্দুল রহিম বললেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রতিবাদকে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলছেন আমরা নাকি সি পি আই (এম) বা কংগ্রেস দলের হয়ে এই আন্দোলন করছি। তাঁর এই মন্তব্য কোনোভাবেই সত্যি নয়। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের কথা আমাদের আন্দোলনের জেদ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এদিকে এদিন বহরমপুর শহরে সম্বন্ধ গ্রুপ অব কোম্পানিজ নামে এক চিটফান্ড কোম্পানির এজেন্ট ও আমানতকারীরাও বহরমপুর শহরে মিছিল করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, পুলিসের কাছে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা কিছুই করেনি। এই সুযোগে কোম্পানির লোকজন পাততাড়ি গুটিয়েছে। সংস্থার অন্যতম লিডার রাজেশ সিংহের বাড়ি লালগোলায়। তিনি ঘটনার পর থেকেই উধাও। তাঁর বাড়ি ঘিরেও দিন কয়েক আগে এজেন্টরা প্রতিবাদ জানান।

No comments:

Post a Comment